সদ্য বিবাহিতা নববধূ

সদ্য বিবাহিতা নববধূ

 সদ্য বিবাহিতা নববধূ পরিবারের সকলের সঙ্গে রবিবার দুপুরে খেতে বসেছে। বাড়ির ছেলেদের পাতে মাছের পেটি পড়লেও তার পাতে লেজের আগের কাঁটাওয়ালা টুকরোটাই আসে। ছোটবেলায় মা বাবার কাছে ভালোটা পেলেও, এখন শাশুড়ি মা তাকে সেই কাঁটাওয়ালা টুকরো দিচ্ছেন।

তবে, তার স্বামী হঠাৎ তার মাছের পেটি শাশুড়ি মায়ের পাতে দিয়ে, শাশুড়ি মায়ের মাছটা নিজে নিলো। শাশুড়িমা একটু ইতস্তত করে বললেন, "তুই সবসময়ই এই বদমাইশিটা করিস বড় খোকা!" স্বামী হেসে বলল, "ছোট্ট থেকেই তো দেখছি আমাদের খাওয়ার পাতে ভালোটা দিয়ে নিজে অবশিষ্টটা নাও। আজ আমি আমার মাকে ভালোটা দেওয়ার চেষ্টা করছি। তাহলে হয়তো ভবিষ্যতে আমার সন্তানও তার মাকে ভালোটাই দেওয়ার চেষ্টা করবে। হাজার হোক তোমরা তো একই পথের যাত্রী, তাই না?"
এই কথাগুলো নববধূকে নাড়িয়ে দিল। শাশুড়িমা এক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে বললেন, "আজ তাহলে তুমিই খাও মা। আসলে আমি যখন বিয়ে হয়ে এসেছিলাম, এমন করে তো কেউ বলেনি। তাহলে হয়ত আমার শাশুড়িমাও নিজের ভুলটা বুঝতে পারতেন।"
নববধূ হাসিমুখে বলল, "মা, আজ আপনাকে খেতেই হবে, আর তাতেই আমার সবচেয়ে বেশী ভালো লাগবে। আর আমার মাছটা তো আপনার ছেলের পিসটার থেকেও বড়, আপনার খারাপ লাগার কিছু নেই।" পাশে বসে স্বামী মিটিমিটি হাসছে, নিজেরটার চেয়ে খানিকটা বড় মাছের পিসটা তার বউ খাচ্ছে আর সদা অবহেলিত মাকে নিজের মাছের পেটিটা আজ খেতে দেখে বোধহয় একটু বেশিই আনন্দ হচ্ছে আজ।
এই ঘটনা শাশুড়িমা এবং নববধূর মধ্যে একটি নতুন সমঝোতা এবং ভালোবাসার জন্ম দেয়। একদিক থেকে, নববধূ তার স্বামীর প্রতি নতুন একটি ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা পায়। অন্যদিকে, শাশুড়িমা বুঝতে পারেন, ভালোবাসা এবং যত্ন একে অপরের মধ্যে ভাগাভাগি করলে সম্পর্ক কতটা মজবুত হয়।
শেষে, নববধূর মনে পড়ে তার মায়ের কথা, "যে ছেলে সত্যি সত্যি নিজের মাকে ভালোবাসে, সম্মান করে, সে তার স্ত্রীকেও মন থেকেই সেই ভালোবাসা আর সম্মানটা দেওয়ার চেষ্টা করে।"
এই গল্পটি প্রমাণ করে যে, ছোট ছোট কাজের মাধ্যমে পরিবারে ভালোবাসা এবং সম্মানের বন্ধন আরও দৃঢ় করা যায়। শাশুড়িমা, ছেলে এবং বউমার এই সুন্দর সম্পর্কের গল্পটি আমাদের শিখিয়ে দেয় কিভাবে পারিবারিক সম্পর্ককে সুন্দর এবং দৃঢ় রাখতে হয়।
সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার জন্য। এরকম ভালো ভালো golpo পেতে পেজটি follow করে রাখুন।